ভাষা বদলি করুন

The Only way to stop any pain in your life is to accept the fact that nothing is yours, nothing was yours, and nothing will ever be yours. They are worldly attachments; given by Allah, belonging to Allah and returning beck to Allah.

May 31, 2016

এমবিয়ে পড়ে লাভ কি?

সময়ের ক্রেজ এখন এমবিএ। চাকরিতে ইচ্ছুকরা তো বটেই, যারা নিজের উদ্যোগে কিছু করার স্বপ্ন দেখেন, তাদের কাছেও ব্যবসায় প্রশাসনের ডিগ্রি এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এতে ব্যবসার খুঁটিনাটি শেখা যায়, টাকা উপার্জনের নতুন নতুন কৌশল জানা যায়।

এমবিএ নিয়ে এই ধারণায় রীতিমতো আক্রমণ করেছেন ফ্রেঞ্চ লেখিকা মারিয়ানা জানেত্তি। ‘দ্য এমবিএ বাব্‌ল’ নামে বইতে তিনি জানিয়েছেন, এমবিএ মানেই টাকা নষ্ট, সময় নষ্ট। লেখিকা নিজে এমবিএ ডিগ্রিধারী, কয়েকটি আন্তর্জাতিক কোম্পানির উচ্চপদে কাজ করেছেন।

বইটি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশ সাড়া পড়েছে। এমবিএ’র সঙ্গে পেশাগত সাফল্যের সম্পর্ক আছে—এই ধারণা রীতিমতো ভুল প্রমাণ করেছে এটি।

জানেত্তি সরাসরি বলেছেন, সাফল্য নিয়ে আজ পর্যন্ত যত লেখালেখি হয়েছে,সেখান থেকে একটা কথা নিশ্চিত—চাকরি কখনও আপনাকে ধনী করবে না।

তিনি জানান, বিপুল সম্পত্তির মালিক হতে হলে শুধু বেতন নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। অন্য কোনো আয়ের উতস বের করতে হবে। শুনতে যতই রূঢ় হোক, এটা সত্যি যে আপনি টাকা দিয়ে অন্যের কাছে শ্রম বিক্রি করলে একটা সময়ের পর আয় আর বাড়বে না।

ধনীরা টাকার জন্য কাজ করেন না। তারা সম্পদ গড়ে তোলেন যা তাদের হয়ে কাজ করে। যদি কাজ করে টাকা কামাতে চান, তাহলে অবশ্যই কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনায় মন দিন। আরও বেশি টাকা কামাতে চান? তাহলে এমবিএ করুন।

কিন্তু বিত্তবান? বিলাসবহুল জীবন, ব্যাংকে কোটি টাকার ব্যালেন্স? নিজ হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান যেখানে হাজার মানুষের কর্মসংস্থান? না, এগুলোর সঙ্গে এমবিএ’র কোনো সম্পর্ক নেই। এমবিএ নিছক সাধারণ একটি চাকরির জন্য।

জানেত্তি বলেন, এটা ঠিক যে বিশ্বের অনেক শীর্ষ কোম্পানির উঁচুপদের কর্মকর্তাদের আয় কোটির ঘরে। কিন্তু তাদের মধ্যে এমবিএ বা চমতকার রেজাল্ট কয়জনের? সিইও হওয়ার জন্য যে এমবিএ দরকার নেই, তা সিলিকন ভ্যালি থেকে শুরু করে ইউরোপের শীর্ষ কোম্পানিগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আর যারা এমবিএ এমবিএ করে মুখে ফেনা তুলছে, তাদের শীর্ষ পদে বসলে হয়তো বেতন টেনেটুনে লাখের অংক ছাড়াবে। সেটা ‘মিলিওনিয়ার’ নয়।

বইটিতে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিরা সবাই উদ্যোক্তা। এবং তাদের প্রায় কারও এমবিএ ডিগ্রি নেই, সার্টিফিকেটে অসাধারণ রেজাল্টের ঝলমলানি নেই। উলটো যে মুহূর্তে তারা বুঝতে পেরেছেন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা তাদের চাকরি করতে বাধ্য করছে, সে মুহূর্তে কলেজ ছেড়ে দিয়েছেন।

যদি উদ্যোক্তা না হন, তাহলে বিপুল ধনী হওয়ার উপায় তারকা খেলোয়াড়, বিখ্যাত গায়ক বা সেলিব্রেটি হওয়া। বলা বাহুল্য, এগুলোর কোনোটির সাথে পড়াশোনার সম্পর্ক নেই।

তাই দিনশেষে যদি আপনার স্বপ্ন থাকে নিজের উদ্যোগ সফল করে অর্থ উপার্জনের, তাহলে গতবাঁধা পথটি ছাড়ুন। ফেসবুকের জুকারবার্গ, মাইক্রোসফটের বিল গেটস, অ্যাপলের স্টিভ জবস, জারার আমানসিও ওরতেগা, ভার্জিনের রিচার্ড ব্র্যানসনের মতো জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ রয়েছে, যারা এমবিএ ডিগ্রিধারীদের চাকরি দেন।

মনে রাখবেন, এমবিএ আপনাকে একটি করপোরেট সংস্কৃতির অংশ হিসেবে গড়ে তুলবে। কখনও নিজস্ব সংস্কৃতি তৈরি করতে দেবে না।

তবে হ্যাঁ, নিশ্চিন্ত নিরাপদ ক্যারিয়ার যদি চান, এমবিএ আপনাকে তা দিতে পারে। কিন্তু নিজের প্রতিষ্ঠান আর অনেক টাকা? সেক্ষেত্রে ড্রপ-আউট কিংবা কারিগরি ডিগ্রি-ই শ্রেয়!

No comments:

Popular Posts