যখন ছোট ছিলাম তখন মায়ে’র দরকারটা আলাদা করে বুঝতাম না। জীবনের শুরু থেকে আমরা যেভাবে শ্বাস নিই , সেটা নিয়ে কখনো আলাদা ভাবে ভাবনাচিন্তা করিনা, বা গুরুত্ব দিইনা , অনেকটা সেরকম। তাই যখন মা খাবার দিত দেরী করত তখন চেচামেচি শুরু করে দিতাম , বুঝতাম না যে মা নিজেও না খেয়েই আছে , বা বুঝলেও সেটাই স্বাভাবিক বলে মনে হত। নিজের জন্মদিনে মায়ে’র কাছে নানা বায়নাক্কা করলেও মায়ে’র জন্মদিনটাই জানতাম না , আজকাল ভাবলে বড়ো কষ্ট হয়।
যখন বাড়ি ছেড়ে বাইরে আসলাম পড়াশুনা আর তারপর কাজের সুত্রে , তখন মায়ে’র অভাবটা ভীষণ ভাবে অনুভব হত , কতদিন এমন হয়েছে না খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছি শুধু বাইরে যেতে হবে বলে , কেউ কদাচিত জোর করেছে খাওয়ার জন্যে , কারো বয়েই গেছে বলার জন্যে, কিন্তু বাড়িতে মা কখনো না খাইয়ে শুতে দেয়নি।
তারপর একদিন এমনি মনে হলো (বলতে পারেন চেতনা হলো ) যে মায়ে’র ও স্বাধ আহ্লাদ থাকতে পারে , তো মায়ের জন্যে জন্মদিনের কেকের ব্যবস্থা করলাম, অনলাইন কেক বুক করে সেই বাড়ি পাঠালাম , আমার বাড়ি অনেক দূরে , শহরের নাম আগরতলা। যাই হোক , মা কেক পেল, খুব খুশী হলো , সবাই মিলে জন্মদিন পালন করলো। পরে কথায় কথায় জানতে পারলাম যে মায়ের জন্মদিন দীর্ঘ ৪৫ বছর পরে মানালো হলো , শুনে ভীষণ কষ্ট হলো, বুকের মধ্যে একটা কান্না দলা পাকিয়ে উঠলো।
আমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা মনে করে যে মা ই তো , মাকে আলাদা করে আর কি দেওয়ার আছে , আমি তাদের কে বলি , আছে। মা কখনো নিজের মুখে হয়তো বলবেনা , কিন্তু কিছু একটা করে দেখবেন মায়ের জন্যে, মা ই পৃথিবীতে সবচেয়ে জরুরী লোক , তার জন্যে কিছু না করলে আর কারো জন্যে কিছু করলেন কিনা কিছু যায় আসেনা। একটু মায়ের জন্যে কিছু করে দেখবেন , মা খুশী হবেন , তারচেয়ে অনেক বেশি খুশী হবেন আপনি।
No comments:
Post a Comment