মোবাইলে কথা বলার সময় কি ধরনের আদব-কায়দা বা শিষ্টাচার মানা উচিৎঃ+ অপরিচিত কাউকে টেলিফোন বা মোবাইল করলে+ অপরিচিত কারো টেলিফোন বা মোবাইল ধরলে + মোবাইলের ক্ষতিকারক দিকঃ + কিছু প্রয়োজনীয় টিপস
☎ ☏ ✆ 📇 📞 📱 📲 📳 📴📵 📶 🖁
১।ফোন করার আগে অথবা ফোন রিসিভ করার আগে উচিৎ আশেপাশে শান্ত পরিবেশ তৈরি করা ।যেমনঃ উচ্চস্বরে রেডিও টেলিভিশন অথবা গান বাজলে সম্ভব হলে তা কমাতে হবে বা আশেপাশে বাচ্চারা চিৎকার করে খেলাধুলা করলে ফোন করার আগে অথবা ফোন রিসিভ করার আগে তাদের থামাতে হবে।
২। কাউকে ফোন করার আগে দেখতে হবে এটা কোন ধর্মীয় আচরন পালনের সময় কিনা? যেমনঃ পাচ ওয়াক্ত নামাজের সময় কাউকে ফোন না করাই ভাল।
২। ক্লাস অথবা মিটিং এ ফোন এর টোন সাইলেন্ট বা ফোন অফ করে রাখাই স্রেয়।
৩। কারো সাথে ফোনে কথা বলার সময় অপ্রয়োযনে পাশে কার সাথে কথা না বলা।এতে যাকে ফোন করছেন অথবা যার ফোন রিসিভ করছেন সে বিরক্ত হতে পারে।
৪।অপ্রয়োয্নীয় কথা না বলে অল্প সময়ের মাঝে কথা শেষ করা।কারন আপনি যাকে ফোন করেছেন তিনি হয়তো ফোনে বেশি কথা বলতে পছন্দ নাও করতে পারেন।
৫। জনবহুল জায়গা যেমন, যানবাহন, হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এ ফোনে কথা নীচু স্বরে বলা উচিৎ যাতে পাশের লোকজন বিরক্ত না হোন।
৬।ঘুমানোর সময় অর্থাৎ গভীর রাতে বা অনেক ভোরে অপ্রয়োযনে কাউকে ফোন না করা ।হয়তো যাকে আপনি ফোন করেছেন তিনি অনেক পরিশ্রম এর পর রাতে একটু ঘুমানোর সুযোগ পেয়েছেন।
৭। অপ্রয়োযনে কাউকে মিস কল দিয়ে বিরক্ত না করা।
৮। ফোন করে জোরপুর্বক কারো সাথে বন্ধুত্ত বা কোন রিলেশন করতে না চাওয়া।
৯। জনবহুল জায়গা যেমন, যানবাহন, হোটেল বা রেস্টুরেন্ট এ ফোনে বেশী আন্তরিক কথাবার্তা না বলা যাতে আশেপাশের লোকজন আপনার কথায় অপ্রস্তুত বোধ না করে।
১০। ফোনে উচুস্বরে গান-বাজনা না শুনা।সুযোগ থাকলে হেডফোন ব্যাবহার করা উচিৎ।
১১। ফোনের রিংটোন মধ্যম সাউন্ডে রাখা।কারন আপনার ফোনের হটাৎ জোরালো সাউন্ডে আশেপাশের লোকজন আৎকে উঠতে পারে।
১২। রিংটোন হিসাবে ভৌতিক সাউন্ড ব্যাবহার না করা।আপনার ফোনের ভৌতিক সাউন্ড এ শিশুদের মানসিক ক্ষতি হতে পারে।
অপরিচিত কাউকে টেলিফোন বা মোবাইলে করলে
----------------------------------------------------
📳 হ্যালো’ শোনার সাথে সাথে অভিবাদন করুন যথা ‘আস্সালামুআলাইকুম, আদাব, গুড মর্নিং ইত্যাদি।’ প্রথমে নিশ্চিত হোন এটা আপনার ইস্পিত নাম্বার কি না, সেজন্য বলুন, ‘এটা কী ৯৮———নম্বর ফোন?’ নম্বরগুলো ধীরে ধীরে স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করুন যাতে তিনি তাঁর নম্বরের সাথে সহজে মিলিয়ে নিতে পারেন।
📳 কখনও তাঁকে ফোন নম্বর জিজ্ঞেস করবেন না। ইস্পিত নম্বর না হলে, বলুন, ‘দূঃখিত, ভুল সংযোগহেতু আপনাকে বিরক্ত করতে হলো।’
📳 ইস্পিত নম্বর হলে সংক্ষেপে আপনার পরিচয় দিন যথা ‘আমি— (নাম) ——-বলছি। — (নাম)— সাহেবের সাথে কথা বলতে পারি কী?’
📳 আপনার নিজের পরিচয় দেবার আগে অপরপক্ষকে কখনও জিজ্ঞেস করবেন না, ‘কে বলছেন’। অচেনা ব্যক্তির কাছে নিজের পরিচয় দিতে কেউই সাচ্ছন্দবোধ করে না। তাছাড়া এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত এবং ব্যক্তিগত প্রশ্নের পর্যায়ে পড়ে বিধায় বিরক্তির উদ্রেক ঘটাতে পারে।
📳 কণ্ঠস্বর থেকে যদি মনে হয় আপনার ইস্পিত ব্যক্তিই কথা বলছেন তখন নিশ্চিত হওয়ার জন্য, বলুন, ‘আমি কী — (নাম)— সাহেবের সাথে কথা বলছি?’ অন্যথায় আপনি বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে যেতে পারেন; পুত্র মনে করে পিতাকেই বন্ধুর মত তুই-তোকারি করে ফেলতে পারেন।
📳 টেলিফোনে আপনার ইস্পিত ব্যক্তিকে পান বা না পান কথোপকথন শেষ করে ধন্যবাদ দিন এবং অভিবাদন বিনিময় করুন।
📳 ইস্পিত ব্যক্তির অনুপস্থিতির কারণে যদি আপনার কোন নম্বর দিতে চান, তবে বলুন, ‘যদি কিছু মনে না করেন অনুগ্রহ করে আমার ফোন নম্বরটি লিখে রাখতে পারবেন কী?’ কাগজ কলম সংগ্রহ করার জন্যে তাঁকে সময় দিন। তিনি প্রস্তুত হলে আপনার নাম, নম্বরগুলো ধীরে ধীরে স্পষ্টকরে বলুন। শেষ হলে তাঁকে একবার পড়তে অনুরোধ করুন এভাবে; ‘আপনি কী অনুগ্রহ করে একবার পড়বেন? আমি যদি কোথাও ভুল করে থাকি।’ এটা আপনার ইস্পিত ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করার জন্য আর একবার অনুরোধ করুন।
অপরিচিত কারো মোবাইল বা টেলিফোন ধরলেঃ
----------------------------------------------
📲 ফোনকল আসলে যথাসম্ভব দ্রুত তা এটেন্ড করুন; একান্ত অপরাগ না হলে খাবারে/ প্রাতকর্মে বা অন্য কোন ব্যস্ততায় সাময়িক বিরতি দিয়ে হলেও ফোন রিসিভ করুন। সর্বাবস্থায় ফোনকলকে অধিক গুরুত্ব দেয়া বাঞ্ছনীয় ।
📲 রিসিভার উঠিয়ে নরমকণ্ঠে বলুন, “হ্যালো” এবং অভিবাদন বিনিময় করুন যথারীতি।
📲 টেলিফোনকারির ‘কে বলছেন? কত নম্বর’ ইত্যাকার প্রশ্নে বিরক্তি প্রকাশ না করে নরম কণ্ঠে তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন, ‘আপনি কাকে চাচ্ছেন বা কত নম্বরে ফোন করেছেন’। এটাই তাঁকে টেলিফোন-শিষ্টাচারে পুশব্যাক করার উৎকৃষ্ট পন্থা।
📲 ইস্পিত ব্যক্তি যদি না থাকে তবে ফোনকারির থেকে জেনে নিন; কোন ম্যাসেজ রাখতে হবে কিনা। থাকলে ম্যাসেজটি লিখে নিন এবং তা দ্রুততম সময়ে ইস্পিত ব্যক্তির কাছে পৌঁছে দিন। কোন কারণে আপনি অপরাগ হলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন তা যথাসময়ে পৌঁছে দেয়ার জন্যে।
📲 আপনার অনুপস্থিতিতে কেউ যদি ফোন করে থাকে, কল-ব্যাক করতে ভুল/ অবহেলা করবেন না। এটা টেলি-শিষ্টাচারের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি দাবি।
📲 কোন কিছু চিবুতে চিবুতে বা হাই তুলতে তুলতে ফোনে কথা বলবেন না। এটা ফোনকারিকে অবহেলা করার নামান্তর।
📲 কথা শেষ হলেই সাথে সাথে রিসিভার রেখে দেবেন না। অপর পক্ষের রিসিভার রাখার শব্দ না শোনা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন; অতঃপর নিজেরটি রাখুন।
মোবাইলের ক্ষতিকারক দিকঃ
প্রযুক্তির এই যুগে আমরা মোবাইল ছাড়া অচল বললে বেশি বলা হবে না। কাজের প্রয়োজনে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষার জন্য আপনার মোবাইল ফোনটি খুবই জরুরি। এই মোবাইলের সঠিক ব্যবহার কি করছি সে বিষয়ে হয়তো অনেকেই চিন্তা করি না। প্রয়োজনের বাইরেও হয়তো মোবাইলে কথা বলছি আমরা। আর এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি নানাভাবে।
প্রযুক্তির যেকোনো আবিষ্কারের মতো মোবাইল ফোনের খারাপ এবং ভালো দুটি দিকই বর্তমান। জরুরি মুহূর্তে একটা মোবাইল ফোন আপনার জীবন-মরণ ঠিক করে দিতে পারে। যেকোনো সময় যেকোনো মানুষের সাথে যোগাযোগ ঘটাতে সাহায্য করে সেলফোন, যা বিস্ময়কর। আবার অবৈধ কাজও হচ্ছে এই মোবাইল ফোন দিয়ে। যা খুবই দুঃখজনক। এই জন্য মোবাইলে কথা বলার জন্য জানা থাকতে হবে কিছু আদব-কায়দা ও মোবাইলের ক্ষতিকারক দিক...। কিভাবে ব্যাবহার করলে আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে তার জন্য রয়েছে স্পেশাল টিপস ...।
সময়েরর সাথে সাথে সেলফোন প্রযুক্তিটির উন্নয়ন ঘটছে। আর তাই এর ব্যবহারকারীর মধ্যে দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পিতামাতা এবং শিক্ষকদের উচিত হবে শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের পরামর্শ শিশু এবং কিশোরদের দেওয়ার জন্য। সেইসাথে মোবাইলে কথা বলার আদব-কায়দাও জেনে নেওয়া উচিত। আসুন, আমরা মোবাইল ব্যবহারের ব্যাপারে আরও যত্নবান হই।
....................................।
মোবাইলের ক্ষতিকারক দিকঃ
----------------------------
আমরা মোবাইলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলি। কিন্তু আমরা জানি না আমাদের প্রিয় মোবাইলটি আমাদের কীভাবে ক্ষতি করছে। কিছু নিয়ম মেনে চললে কিছুটা হলেও ক্ষতির হাত থেকে বাঁচতে পারি। কোনো কিছুর দ্বারা ক্ষতি হলে আপনি সহজে বুঝতে পারেন এবং তার প্রতিকার করে থাকেন। কিন্তু যে ক্ষতি দেখা যায় না প্রাথমিক ভাবে বোঝা যায় না কিন্তু আপনার ক্ষতি করে যাচ্ছে কিন্তু আপনি টের পাচ্ছেন না যাকে বলে সাইলেন্ট কিলার। মোবাইলের রেডিয়েশন খুবই ক্ষতিকারক। মোবাইল দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট কথা বলার পর দেখবেন আপনার মাথা ঝিম ঝিম করছে। অস্থিরতা বেড়ে গেছে। একটানা ১ ঘণ্টা বা তার অধিক কথা বললে তখন দেখবেন আপনার মাথাব্যথা করছে। বড়দের তুলনায় শিশুদের বেশি ক্ষতি হয়। তাই শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখুন। কথা বলতে বলতে এক সময় ব্রেইন ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে বলে এদের ক্ষতির পরিমাণ বেশি থাকে। রেডিয়েশনের হাত থেকে রক্ষা পেতে করণীয়—
মোবাইল কখনোই বুক পকেটে রাখবেন না।
কথা বলার সময় এক কানে ধরে কথা বলবেন না ।
কথা বলার সময় দুই কান ব্যবহার করুন।
ব্যাটারির চার্জ কমে গেলে কথা না বলাই ভালো। কারণ তখন রেডিয়েশনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
প্রয়োজনে হেডফোন ব্যবহার করুন।
ঘুমানোর সময় মোবাইল সাথে নিয়ে ঘুমাবেন না।
ভালো ব্র্যান্ডের মোবাইল ব্যবহার করুন। কারণ চাইনিজ মোবাইলে রেডিয়েশন বেশি হয়।
একটানা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।
এমনকি প্যান্টের পকেটে মোবাইল রাখাও নিরাপদ নয়। কোমরে বা হাতে মোবাইল রাখুন।
-------
কিছু টিপস
-------------
মোবাইল ফোনের স্পিকার অন করে কথা বলার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মাথা মোবাইল থেকে দূরে থাকে। যদিও এটাও ক্ষতিকর কিন্তু ঠিক ততটা নয় মাথার সামনে মোবাইল ধরলে যতটা ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা থাকে তার থেকে অনেক কম।
গাড়ি, ট্রেন, বিমানে মোবাইলের ব্যবহার যতটা সম্ভব কম রাখুন। মোবাইল ফোন লোহা নির্মিত জায়গায় বেশি পাওয়ার ইউজ করে। আর অনেক বেশি রেডিয়েশন ছড়ায়।
যখন আপনি ঘরে থাকবেন তখন মোবাইলের পরিবর্তে ল্যান্ডলাইন ব্যবহারের চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন কর্ডলেস ল্যান্ড ফোনগুলো কিন্তু মোবাইল থেকে কম রেডিয়েশন ছড়ায় না। তাই কর্ডযুক্ত ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করুন।
আপনার মোবাইলের জন্য একটা কাভার কিনুন যেটা ফোনের রেডিয়েশন ছড়ানোকে কিছুটা হলেও রোধ করবে।
ভিটামিন 'সি' আর 'ই' সমৃদ্ধ খাবার খান যেগুলো আপনার দেহের কোষগুলোকে ধ্বংস হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে। কাঁচা মরিচ, পেয়ারা, পেঁপে, কমলা লেবু, স্ট্রবেরি প্রভৃতি খান। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে। আর বাদাম, রান্না করা শাক প্রভৃতি খান এতে ভিটামিন 'ই' আছে।
মোবাইলে কথা বলার থেকে ম্যাসেজে কথা বলুন। এতে অন্তত মোবাইলটা আপনার মাথার কাছ থেকে দূরে থাকবে। ফলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা কিছুটা হলেও কমবে ।
No comments:
Post a Comment