জাকারিয়া ইছলাম
ভালবাসার সংজ্ঞা কতো জায়গায় কতো ভাবেই না পড়েছি , তবে কোন সংজ্ঞায় আমার কাছে সম্পূর্ণ বলে মনে হয় নি। জীবনের উপলব্ধি দিয়ে নিজে যে সংজ্ঞা দাড় করিয়েছি তা হলো শরীর, মন ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা ভাল থাকলে অন্তরে ভালোবাসার সৃষ্টি হয়। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক অবস্থা সচ্ছল থাকলে ভালোবাসার অবয়ব সুন্দর ভাবে ফুটে ওঠে। তবে দীন অর্থনৈতিক অবস্থায় ভালোবাসা দীর্ঘক্ষন স্থায়ী হয় না।
শুধু ভালোবাসা দিয়ে যেমন জীবন চলে না তেমনি ভালোবাসা ছাড়াও জীবন চলে না । নিঃসন্দেহে ভালোবাসা ও জীবন একটি অন্যটির পরিপূরক। তবে ভালোবাসা পরিবর্তনশীল । প্রচণ্ড ভালোবাসা ভয়ংকর ঘৃণায় পরিণত হতে সময় লাগে না। ভালোবাসার কি এক অদ্ভুত রঙ ,রূপ রয়েছে যা বদলাতে একটু সময় লাগে না । সামান্য অসহিষ্ণুতা ভালোবাসায় ভরা মুহূর্তগুলো এক নিমেষেই কদর্যতায় ভরে যায়।
ভালবাসার ক্ষেত্রে প্রেমিক বা প্রেমিকার বড় সমস্যা হলো , আমরা সব সময় নিজের পছন্দ মত অন্যকে চালিত করতে চাই । কখনো অন্যের পছন্দের দাম দিতে চাই না ।নিজেকে মূল্যবান , অন্যকে গুরুত্বহীন ভাবতে পছন্দ করি। এ জন্যই তুচ্ছ কারণে অনেক বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়।তাই জীবন ও ভালবাসার প্রতি আমাদের বিতৃষ্ণা চলে আসে। এবং খুব সহজেই মন খারাপ হয়।
মাঝে মধ্যে অকারণে আমারও খুব মন খারাপ হয়ে যায়।অনেক চেষ্টা করেও এর কারন খুজে পাই না । মন বড় বিচিত্র এক জিনিস! কিছুতেই তার টিকির নাগাল পাওয়া যায় না । মন কত ভাবে যে মানুষকে নাকাল করে বেড়ায় !
আসলে মন নিয়ন্ত্রণ করার সাধ্য কোন সাধারণ মানুষের নেই। মূলত মনই মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে । তাই তো মাঝে মধ্যে কোন কারন ছাড়াই আমরা হাসি । কাঁদি ও ভারাক্রান্ত হই।
যাই হোক এলোমেলো অনেক কথা লিখে ফেলেছি। যে কারণে এই কথা গুলো লিখা সেই কারনই বলা হয় নি ।একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম "ভালোবাসা কী?"কোনো উত্তর পাইনি।
হয়তোবা কষ্ট পেলাম,উরিব্বাপস্!!! কষ্টের সংজ্ঞাও আপাতত জানা নেই।এবার এটা নিয়ে ভাবতে হবে!
আমার জানা মতে , প্রতিটি মানুষ ঘুমানোর আগে তার প্রিয় মানুষটিকে কল্পনা করে এবং তার কথা চিন্তা করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে ।
১.
ভালবাসা কি?
ভালোবাসা প্রকাশের জন্য বিশেষ কোন দিনের বা দিবসের প্রয়োজন হয় না। ভালোবাসার বিশেষ কোন রং নেই প্রকৃত ভালোবাসার মানুষের কাছে প্রতিটি দিনই ভালোবাসার এবং ভালোবাসার। তবে এইটা সত্য যে ভালোবাসা প্রকৃতির (অর্থাৎ বিশেষ ঋতু যেমন বসন্ত ) উপর নির্ভর করে …আমি এই লেখা ভালোবাসার দিবসকে নিয়ে লিখি নি লিখেছি ভালোবাসার প্রিয় ঋতু বসন্ত কে নিয়ে। অন্য যে কোন সময়ের চেয়ে এই সময়টাতে ভালোবাসার মানুষকে কাছে পাবার অনুভূতি অনেক বেশি প্রকাশ পায়! কারণ বসন্তের রঙে প্রেম সবসময়ই আরও রঙিন হয়েছে। বসন্ত কখনোই বিরহ হয়ে দেখা দেয়নি প্রেমে বরং মানব মনের বসন্ত, প্রেমে পুষ্টি জুগিয়েছে আদি থেকে। প্রত্যেকটি মানুষই জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বসন্তের রঙে প্রেমকে অনুভব করে নতুন করে।
২.
ভালবাসা মানে কাউকে জয় করা নয় বরং নিজেই কারো ভালবাসায় হেরে যাওয়া। এটা জ্ঞানের গভীরতা দিয়ে হয়না, হয় হৃদয় এর পবিত্রতা দিয়ে! পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত এবং আলোচিত শব্দ “ভালবাসা”।
এই ভালোবাসা কখনও কাঁদায়, কখন হাসায়, কেউ এর জন্য আত্মবিসর্জন দেয়। মানুষ কত ত্যাগ স্বীকার করে ভালোবাসার মানুষকে পাবার জন্য। আবার এই ভালবাসার জন্য মানুষ মূল্যবান অনেক কিছুই হারায় যার জন্য বিন্দুমাত্র আফসোস ও কখনো হয় না। আসলে আমাদের মানব মন খুব ই অস্থির এক জিনিস সে যে কি চাই সে আসলে নিজেও জানে না। আবার সব কিছু জেনে শুনেও এই মন ভুল পথে পা বাড়ায়। বিবেক তখন তাকে অজস্র বার নিষেধ করে, এই বিবেক ও মনের যুদ্ধে সব সময় মনেরই জয় হয়। আর তখনি একজন মানুষ
ভালবাসা অনুভব করতে পারে এবং ভালোবাসার মূল্য দিতে পারে, আর এই জন্যেই পৃথিবী এত সুন্দর। না হলে তো পৃথিবীর সব মানুষ রোবট হয়ে যেত।
৩.
ভালোবাসা মানে পরস্পরকে বুঝতে পারা। আমি যে মানুষটিকে ভালোবাসব তাকে যদি না বুঝতে পারি তাহলে এই প্রেমের কোনো অর্থ
আছে বলে মনে হয় না। মুখে মুখে সবসময়
ভালোবাসি ভালোবাসি বলার চেয়ে আমার মনে হয় ভালোবাসার মানুষটাকে বুঝতে পারা অনেক বড় ব্যাপার। ভালোবাসা বেঁচে বা টিকে থাকে পরস্পরের বিশ্বাসে। যে প্রেমে বিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয় সেখানে হয়ত প্রেম থাকে না, থাকে সামাজিকতাকে রক্ষা। যে কাউকেই ভালোবাসা যায়। ভালোবাসা অনেক পবিত্র একটি অনুভূতি। স্বার্থসিদ্ধির জন্যও প্রেম করা উচিত নয়। প্রেম হচ্ছে পৃথিবীর মধুরতম সম্পর্ক যেখানে থাকবে না কোনো চাওয়া-পাওয়া, থাকবে না কোনো স্বার্থ, থাকবে শুধুই ভালোবাসা।
৪.
নিজে অসুখী হয়ে অন্যকে ভালোবেসে সুখী করা যায়না। কেউ আপনার জীবনে সুখ এনে দেবে ভেবে কারো সাথে প্রেমে জড়াবেন না। বরং আপনি কারো জীবনে সুখ এনে দেবেন ভেবে প্রেম করুন। ভালোবাসা দেওয়ার জিনিস, নেওয়ার জিনিস নয়। আপনি যদি ভালোবাসা দেওয়ার চেয়ে ভালোবাসা পাওয়াতে বেশি সুখ পান, তাহলে আপনি এখনো ভালোবাসার গভীরে যেতে পারেননি। গভীর ভালোবেসে যে সুখ পাওয়া যায় তার সাথে প্রায় অন্য কোনো সুখের তুলনা চলেনা! ভালোবাসার সাথে প্রত্যাশার (expectation) কোনো সম্পর্ক নাই।
সত্যিকারের ভালোবাসা শুধু ভালোবাসার মানুষটিকে সুখী করতে চায়, তার থেকে কোনো প্রতিদান আশা করে না। প্রত্যাশার চাপ আস্তে আস্তে ভালোবাসাকে মেরে ফেলে। আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনার প্রত্যাশা পূরণের মেশিন নয় সত্যিকারের ভালোবাসা মানুষকে মুক্ত করে, বেঁধে ফেলে না। ভালোবাসা আফিমের মতো, লোহার শিকল নয়। আপনার ভালোবাসার মানুষ খুব সম্ভবত আপনার কাছে ফিরে আসবে যদি আপনি তাকে মুক্ত করে দেন। লোহার শিকল দিয়ে ভালোবাসার মানুষকে আটকে রাখার চেষ্টা করলে পাখি খাঁচা ভেঙ্গে উড়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। শেকল পরানোর চেয়ে বরং পাখিকে ভালোবাসার আফিম খাওয়ান।
৫.
ভালোবাসাকে শুধু বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ডের মধ্যেকার সম্পর্ক মনে করে ‘ভালোবাসা’ নামক পবিত্র নামটাকে অপমানিত করবেন না।ভালোবাসার পরিধি মহাবিশ্বের মতোই বিশাল। ‘ভালোবাসা’ নামক বস্তুটিতে যতটা আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, তা আর অন্য কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। আর এই আত্মতৃপ্তির পরিপূর্ণ স্বাদ আপনি তখনই পাবেন, যখন এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা ও তার সৃষ্টিকে আপনি নিঃস্বার্থভাবে মনঃপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতে পারবেন। আপনি কখনই পারবেন না অন্য কারও ভালোবাসাকে ছিনিয়ে নিতে কিংবা জোর করে অন্যের ভালো লাগার মানুষ হতে। বরং আপনি যেটা পারবেন তা হল নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করতে যাতে যে কেউ আপনার ব্যাবহারে মুগ্ধ হয়ে আপনাকে পছন্দ করতে শুরু করে। আপনি যতোই ভাবুন না কেন যে-অন্যের জন্য আপনি কিছু করছেন কিংবা করে যাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই মানুষগুলো তা বুঝতে পারবে না। তাই বরঞ্চ উচিত হবে তাদের থেকে কোন কিছুর আশা না করা, নইলে আপনাকে দুঃখ পেতে হবে। বিশ্বস্ততা অর্জন করতে হলে আপনাকে অনেক বছরের সাধনা করতে হবে, অথচ মাত্র এক সেকেন্ডের ব্যবধানে আপনার উপর থেকে সমস্ত বিশ্বাস উঠে যেতে পারে। সুতরাং বুঝে শুনে চলাই মঙ্গল।
৬.
জীবনে আপনি কি কি পেয়েছেন তা আপনি হামেশাই ভুলে যাবেন, কিন্তু কি কি হারিয়েছেন তা বারেবারে মনে পড়ে আপনার মনকে ক্ষত বিক্ষত করবে। সুতরাং সবসময় অতীতের ভালো দিকগুলো মনে করবেন, খারাপ কিছু ভেবে?নিজেকে অযথা কষ্ট দিবেন না। চোখের সামনে যাদেরকে দেখছেন তাদেরকে আগামিকাল সকালবেলা আর দেখতে পাবেন কিনা তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই কারো সাথে দ্বন্দ্ব থাকলে শেষ বিদায় হয়ে যাবার আগেই সম্পর্কটা সুন্দর করে নিন। যা কিছু হয়েছে তা ভুলে যান। শুধু মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসুন। দেখবেন আপনার নিজের অজান্তেই আশপাশের মানুষগুলো আপনাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। ভালোবাসা হচ্ছে এমন যখন কেউ আপনার হৃদয় ভেঙ্গে দেয় 'আর সবচেয়ে আবাক বিষয় হচ্চে' আপনি সেই হৃদয়ের প্রতিটি ভাঙ্গা টুকরো দিয়ে তাকে ভালবাসেন। কেউ তোমাকে পছন্দ করবে এই আশায় নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলো না তুমি যেমন আছ তেমনই থাকার চেষ্টা কর! যে তোমাকে সত্যিকার অর্থেই ভালবাসবে সে সত্যিকারের তোমাকেই ভালবাসবে। ভালোবাসার জন্য কালের প্রয়োজন নেই, একটি মুহুর্তই যথেষ্ট। একজন প্রকৃত প্রেমিক শত শত মেয়েকে ভালবাসে না, বরং সে একটি মেয়েকেই শত উপায়ে ভালোবেসে থাকে। পৃথিবীতে ভালোবাসা না পেয়ে হয়ত বেঁচে থাকা যায়, কিন্তু ভালো না বেসে বেঁচে থাকা যায় না। আবেগের বশীভূত হয়ে ভালোবাসার জন্য জীবনটা শেষ করে দেয়ার অর্থ ভালোবাসার মানুষের পাশাপাশি আপন জনদেরকে সারা জীবনের জন্য হারানো, সেইসঙ্গে ভালোবাসার মানুষকে অপরাধী বানিয়ে চলে যাওয়া। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে বিসর্জন দেয়ার নাম জীবন নয়, তার জন্য লড়াই করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার নাম জীবন।
৭.
খুব তুচ্ছ কারনে যে কারো প্রতি ভালো লাগা তৈরি হতে পারে। কোন মেয়ের ভূবন ভুলানো হাসি দেখে এক মুহুর্তেই তাকে ভালো লেগে যেতে পারে। কিংবা রাস্তায় চলতে ফিরতে সুন্দরী কোন মেয়েকে এক পলক দেখেই যে কোন ছেলের হার্টবিট মিস হয়ে যেতে পারে। অথবা কোন ছেলে খুব সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলে, কিংবা গিটার বাজিয়ে, গান শুনিয়ে কোন মেয়েকে মুগ্ধ করে দিতে পারে। আর তাতে ছেলেটার প্রতি মেয়েটার এক ধরনের অনুভূতি তৈরি হয়। এই অনুভূতি গুলোকে আসলে ভালো লাগা বলে ভালোবাসা নয়। ভালোবাসা এত সহজে হয়না। একজন মানুষের জন্য ভালোবাসা তৈরী হয় খুব ধীরে ধীরে। চাইলেই যে কাউকে ভালোবাসা যায়না। চাইলেই যে কাউকে ভালোবাসি বলা যায়না। চাইলেই সব ছেড়ে ছুঁড়ে কেউ একজনের হাত ধরে দূরে কোথাও পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করেনা। চাইলেই কেউ একজনের জন্য পুরো পৃথিবীর বিপক্ষে চলে যাওয়া যায়না। সেই কেউ একজন টা খুব স্পেশাল একজন মানুষ হয়। যাকে শুধু ভালোবাসাই যায়। চোখ বন্ধ করে যার উপর নির্ভর করা যায়। যে অনুভূতি খুব তাড়াতাড়ি তৈরি হয় তা হারিয়েও যায় খুব দ্রুত। অনুভূতি হারিয়ে গেলে সে মানুষটাও কিছু না বলে চুপি চুপি আপনার জীবন থেকে হারিয়ে যায়। তখন বুঝতে হবে আপনার প্রতি তার কখনো ভালোবাসা ছিল না। যা ছিল তার পুরোটাই ছিল ভালো লাগা। কারন যাকে ভালোবাসা যায় হুট করে রাস্তার মাঝখানে তার হাত ছেড়ে দিয়ে দূরে চলে যাওয়া যায়না। বেশিরভাগ মানুষই ভালো লাগা এবং ভালোবাসার মধ্যে পার্থক্য বের করতে পারেনা। আর তাইতো অভিমানী মেয়েটা আজো প্রতীক্ষা করে। নির্ঘুম রাতে বিছানায় শুয়ে ছটফট করে। আর তাইতো বোকা ছেলেটা অক্সিজেনের বদলে বুক ভরে নিকোটিন আর সিগারেট নেয়। রাত গভীর হলে মেয়েটার নাম্বার বন্ধ জেনেও সে নাম্বারে বার বার ফোন করে অস্থির সময় কাটায়।
৮.
ভালবাসা হল, বিসর্জন,নিজে কে বিলিয়ে দেয়া,উজার করে দেয়া কারু জন্যে। ভালবাসা হল,মনের মাঝে কারু ছবি একে রাখা,তার যত্ন করা, তাকে মূল্যায়ন করা, তার সম্মান রক্ষা করা,ভালবেসে যাওয়া। ভালবাসা হল,বেচে থাকার আশায় বেচে থাকা,যে বেচে থাকার আশা জাগায় তাকেই ভালবাসা,তার কাছেই নিজেকে সপে দেয়া। ভালবাসা কোন ওয়াদা রক্ষা নয়। ভালবাসা হল,কারু প্রতি বিশ্বস্ত থাকা। শুধু তাকেই ভালবাসি,এ বিশ্বাসেই তার হাতটা ধরা। তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা নয়,তার স্বপ্ন গুলোকে পুরন করা। মাইলের পর মাইল এক সাথে হেটে যাওয়া, কিংবা ঘণ্টার পর ঘন্টা কারু জন্যে আপেক্ষার নাম ভালবাসা নয়। ভালবাসা হল, হৃদয়ের সাথে মিশে থাকা, কারু অস্তিত্তের উপস্থিতি নিজের মাঝে ধারন করা। নিঃশ্বাসে নিঃশ্বাসে শুধু তাকেই অনুভব করা, তার ছোট থেকে ছোট চাওয়া গুলো, পুরন করার আস্থিরতা, তার ভালমন্দ সবখানেই নিজেকে খুজে পাওয়া। ভালবাসা হল, কাউকে দেখার ইচ্ছাই, মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠা, তার ভাবনাই জেগে থাকা, নিজের সুখটাকে তার মাঝেই বিলিয়ে দিয়ে একটুখানি হাসি এটে দেয়া আর সব থেকে বড় কথা ভালবাসা হল, সারাটা জীবন তার পাসে থাকা। আর সব প্রেম সফলও হয় না। প্রেমে ব্যর্থ হলে নিজের জীবন নষ্ট করে দেয়ার মানে নেই। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে বাস্তবতাকে মেনে নিতে শিখতে হবে। পৃথিবীতে প্রেম অল্পতেই শেষ হয় না। প্রেম জীবনে একবারও আসে না। প্রেম জীবনে বহুবার বহুরুপে আসে।
৯.
তুমি যদি ভালবাসো মন থেকে যেখানে থাকেনা দৈহিক চাহিদা প্রথম শর্ত, যেখানে ভালবাসার ভবিষ্যত নির্ভর করে না লাভ ক্ষতির হিসেবের উপর সেখানে ভালবাসা কোন ভাবেই শুধু সময়ের উপর নির্ভর করতে পারেনা। মিথ্য স্বার্থে ভরা তিন বছরের ভালবাসাও অর্থহীন তিন দিনের সত্যিকার ভালবাসার কাছে। ভালবাসা "ভালবাসাই" এবং এর অনুভুতি সব সময়ের জন্য একই। সময়এখানে একমাএ অথবা প্রধান কারন নয়।বাস্তবতার বেড়াজালে যখন ভালবাসার মানুষ দুজন একে অন্য থেকে হয় বিচ্ছিন্ন, যখন মনের হাজার ইচ্ছাওদুটি মানুষকে রাখতে পারেনা কাছা কাছি তখন কিন্তু তাদের মধ্যে তীব্র বেদনার তৈরী হয়। কিন্তু এই বেদনাটাকে যদি আমরা বিশ্লেষন করি তাহলে কি দেখতে পাই? দেখতে পাই যে তারা একজন আর একজনকে খুব মিস করতেছে, মিস করতেছে তাদের হাসি,কান্না,খুনসুটি। হয়ত তারা চোখও মোছে মনের মানুষের কথা ভেবে। আবার তাদের নির্মল আনন্দের উপলক্ষ্য এই কষ্টময় বেদনাটুকুই। তারা এটা ভেবে খুশি হয় যে তার ভালবাসার মানুষটি তাকে কত মিস করতেছে, তাকে নিয়ে কত ভাবতেছে,তার জন্য কথা জমিয়ে রাখতেছে। তারা ভেবে খুবই পুলকিত হয় যে তারাক একজন আর একজনকে কত ভালবাসে।সত্যি বেদনাও মানুষকে আনন্দ দিতে পারে, দিতে পারে মনের মানুষকে নিয়ে গর্ব করার সুখময় সুযোগ। আর এই আনন্দই দুটি মানুষকে করে আরো রঙ্গিন,ভালবাসা করে আরো পরিণত।
১০.
ভালোবাসা মানে সম্পর্ক,মানুষে মানুষে বিশ্বাসের ভিত্তি। ভালোবাসার অনেক রূপ।যেমন ভাই-বোনের ভালোবাসা,বাবা-মায়ের ভালোবাসা। পরিবারে একটা পশুর প্রতিও ভালোবাসা হতে পারে। যেমন অনেকে কুকুর পোষে, বিড়াল পোষে, পুকুরে মাছ রাখে,পাখিকে কথা বলতে শেখায়। এসব কিছুই ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। কেউ কেউ ভালোবাসা থেকে গাছ লাগায়,গাছের পরিচর্যা করে। মানুষের প্রতি গাছের ভালোবাসা আছে কিনা জানি না। হয়তো আছে। একটার পাশে গিয়ে তুমি পরিচর্যা করছ,খোঁজ নিচ্ছ দেখবে সেটি তাড়া তাড়ি বড় হয়ে উঠছে। অন্যটির কোনো খোঁজ নাওনি। তাই সে বেড়ে উঠছে না। এটা কিন্তু পরীক্ষিত। এর থেকেই বোঝা যায় গাছেরও অনুভূতি আছে। ভালোবাসা শুধু নর-নারীর প্রেমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্যেই ভালোবাসার প্রকাশ ঘটে। একজন রাজনীতিবিদকে মানুষ ভালোবাসে। তাকে হয়তো সামনা সামনি কোনোদিন দেখেওনি। তবুও ভালোবাসে। কেন? শ্রদ্ধাবোধ থেকে একেকজনের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ তো একেক রকম। কারওটা সফট। কারও বেলায় খুবই অ্যাংরি। কারওটা কখনও কখনও স্বেচ্ছাচারিতার পর্যায়েও পড়ে। সে অধিকার খাটায়।ভালোবাসার ঘনত্ব বেশি হলেই সেটাকে প্রেম বলা যায়। উদাহরণ দিয়ে বলি। একটি মেয়েকে আমারভালো লাগে, তাকে ভালোবাসি। এই অনুভূতি যখন গাঢ় হয় তখন সেটাকে প্রেম বলা যেতে পারে।
১১.
ভালোবাসার মাপকাঠি হল একজনের ভালো গুন বা বাহ্যিক রুপদেখে মুগ্ধ হলাম এবং তাকে ভালবেসে ফেললাম এবং মনেক বুঝালাম আমি তার প্রেমে পড়েছি। এট কি আসলেই ভালোবাসা না ভালোলাগা? আমারা অধিকাংশই এই ভুলটা করতে থাকি কারো কোন ভালো গুন বা বাহ্যিক রুপ দেখেই বলি আমি তার এই গুনের জন্য তাকে ভালোবাসি। অথবা তার বাহ্যিক রুপবা সৌন্দর্য জন্য আমি পাগল হয়ে গেছি এবং আমি তাকে ভালবেসে ফেলেছি, প্রেমে আমি পরেছি, যে কারো ভালো গুন বা সৌন্দর্যকে সবাই পছন্দ করে সন্দেহ নেই! তাহলে অন্যসব সাধারণ মানুষের সাথে প্রেমিক প্রেমিকার ভালোলাগার পার্থক্যটা কোথায়? আসলে ভালোলাগা ও ভালোবাসার পার্থক্যটা এখানেই। ভালবাসা বুঝার জন্য আপনাকে অন্য সাধারনের ভালোলাগার চেয়ে অনেক উপরে যেতে হবে অর্থাৎ ভালো গুন গুলর সাথে তার দোষ গুলকেও মেনে নিতে হবে প্রত্যেক মানুষের মাঝে ভালো খারাপ উভয় গুনই আছে এই উভয় গুন না থাকলে তো সে মানুষ পর্যায়ে পড়ে না! কোন গুনটাকে প্রাধান্য দিয়ে সমাজের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারছে, তার উপরভিত্তি করে মানুষকে বিবেচনা করা হয়। আমারা সবাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত মানুষের কাছে আমাদের ভাল গুনগুলোকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি সম্পর্ক যতই গভীরে যেতে থাকে তখন তার ভালো না লাগা গুন গুলো ওআস্তে আস্তে সামনে আসতে থাকে আর তখনি ভালোবাসা ও ভালোলাগার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। কিন্তু সেই সময় আর নিজেকে ফিরানোর সুযোগ থাকে না। শুরু হয় জটিলতার ভালোবাসা নামক সবচেয়ে সুখের বিষয়টা সবচেয়ে দুঃখের ও কষ্টের বিশয়ে পরিনত হয়। একটা বিষয় কেউ চিন্তা করেছেন. কেন মায়ের ভালোবাসা এত প্রকৃতও চিরন্তন? কারণ মা তার সন্তানের চরিত্রের সব দোষ কেই মেনে নেন এবং তা শোধরানোর চেষ্টা করেন সন্তানের ভালোর জন্য! আর আমারা ভালোলাগা মানুষটির দোষ বা ভালো না লাগা বিষয় গুলো মেনে না নিয়ে নিজের সুবিধার জন্য তাকে পাল্টাতে বলি আর তখনি শুরু হয় সম্পর্কের মূল ফাটল আর তখনি ভালোবাসার অপমৃত্যুঘটে ভালোলাগা অর্থাৎ আবেগ মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর বাস্তবতা সে স্বপ্নকে কষাঘাতে জর্জরিত করে। আবেগ আর বাস্তবতার লড়াইয়ে আবেগ কখনোই জয়ী হতে পারেনা। আবেগের বশবর্তী হয়ে কেও তার ভলোবাসার মানুষটির জন্য জীবনও দিতে পারে কিন্তু শুধু আবেগ তথা ভালোলাগা দিয়ে দাম্পত্য জীবনে সুখের ঠিকানায় পৌছে দিতে পারেনা। আর ভালোবাসা পাওয়াও সম্ভব নয়। তাই শুধু আবেগ কিংবা ভালোলাগা নয় পারস্পরিক ত্যাগ এবং সঙ্গীটির দোষ মেনে নেয়ার ক্ষমতা এই মাপকাঠিতেই কেউ বিচার করতে পারে সে তারসঙ্গীকে কতোটা ভালোবাসে কিংবা তারসঙ্গী তাকে কতোটা ভালোবাসে। ভালোবাসার এই মাপকাঠিতে মেপে ভালোবাসতে পারলেই পাওয়া যাবে সুখ ও আনন্দ, যাওয়া যাবে ভালোবাসার সেইস্বপ্নের জগতে।
১২.
ভালোবাসার মানুষের সাথে আপনার মত পার্থক্য হবে,বুঝবেন এটাই স্বাভাবিক। দু'জন মানুষের মাঝে খুব বেশি মিলথাকা সম্ভব হয় না কখনো। একই প্রাণ,একই আত্মা -এইসব কেবল মাত্র গল্প-উপন্যাস -মুভির বিষয়। বাস্তব জীবনে আপনাদের অতীত আলাদা,আপনাদের চিন্তার ধরণ আলাদা, আপনাদের শৈশব-কৈশোর আলাদা। এই ভিন্নতার পরেও দু'জনে দু'জনার খুব কাছের মানুষ কেননা আপনারা দু'জনে এক সাথে হয়েছিলেন দুইজনের সত্ত্বা হারিয়ে এক হয়ে মিশে যেতে নয়, বরং দু'জন পাশাপাশি একটি অভিন্ন লক্ষ্যে যাত্রা করতে। আর জান্নাতে যাওয়ার সেই প্রচেষ্টা মৃত্যু পর্যন্ত আপনি ছেড়ে দিবেন না নিজের স্বার্থেই, তাইনা? স্বামী-স্ত্রী দু'জনের কিছু ভিন্নতা কিন্তু প্রত্যেকের জীবনে ভারসাম্য তৈরি করে দেয়। মনো মালিন্য হলে সেই দুরত্বটুকুকে জোড়া লাগাতে উদ্যোগ নিয়ে ফেলুন। নিজে থেকে সমস্যা সমাধান করতে প্রথমে এগিয়ে আসলে যদি তখন মনের মাঝে জেগে ওঠা পরাজিত হবার টনটনে অনুভূতি,অহং বা দেমাগকে এই সুন্দরতম সম্পর্কতে হিসেবে নিয়ে আসেন তবে আপনি চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। এই সম্পর্কটার গোটাটাই আপনার -জীবনসঙ্গীর ভালো থাকা আসলে আপনারই ভালো থাকা। তাই দু'জনের ভিন্নতাটুকুকে গ্রহণ করে নিন এবং অপর জনকে স্বস্তি দিতে একটু যদি স্যাক্রিফাইস করতেই হয়,তবে করে ফেলুন। দেখবেন এটুকুর কারণে আপনি যেই আনন্দ আরশান্তি উপভোগ করবেন তা আপনার কষ্টকে ভুলিয়ে আপনাকে অদ্ভুত সুন্দর অনুভূতি দিবে। সুন্দর দাম্পত্য জীবনটা রেডিমেড পাওয়া যায় না, তাকে তিলে তিলে গড়ে নিতে হয়। গড়ে ওঠা সেই শান্তির বাড়ির কারিগর কিন্তু মূলত আপনিই! জ্বি,আপনি এবং আপনারা দু'জন...একবার এক দম্পতিকে জিজ্ঞাসা করা হলো তারা কীভাবে একসাথে ৬০বছর কাটিয়ে ছিলেন। তারা উত্তর দিয়ে ছিলেন, আমরা যে সময়টাতে জন্মেছিলাম তখন কোনকিছুতে সমস্যা দেখা দিলে তার মেরামত করে সারিয়ে নিতাম, ছুঁড়ে ফেলে দিতাম না। মনে রাখবেন আপনার একটা সামান্য ভুল আপনার ও আপনার সঙ্গিনীর ও আপনাদের উভয়ের পরিবারের স্বপ্নও সুখকে ভেঙ্গে চুরমাচুর করে দিতে পারে! আপনি হয়তো রাগের বা আবেগের বশীভূত হয়ে ভুলটা করেছেন কিন্তু যার সাথে করেছেন তার হয়তো আপনার রাগের পরিস্থিতি বুঝার ক্ষমতা নাও থাকতে পারে. যখনি মাথা গরম হয়ে যাবে তখন স্রেফ একবার চোখ বন্ধকরে চিন্তা করুন" তার অবস্থানে আপনি থাকলে আপনি কি করতেন, কারো দোষ ত্রুটি ধরার আগে তার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি চিন্তা করুন। "ভুলের জন্য বকা-ঝকা বা গালি গালাজ করলে সে কখনো নিজের ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয় না কারন সে ভাবে তার ভুলের সাজা পেয়ে গেছে অনুতপ্ত হয়ে লাভ কি!
আর আপনি যদি তার ভুল ধরিয়ে দিয়ে তাকে কিছু না বলেন তাহলে সে ভুলের জন্য অনুশোচনা করবে আর অনুশোচনা চেয়ে কঠিন কোনশাস্তি এই পৃথিবীতে নেই। তাকে অনুতপ্ত হওয়ার সুযোগ দিন, নিজের ভুল উপলব্দি করতে দিন, এতে আপনি তার কাছে বড় ও মহান হয়ে থাকবেন। আর সেও নিজের ভুল বুঝতে পেরে একই ভুল দ্বিতীয় বার আর করবে না।
-----------------------------------------------------------------
আশাকরি উপরের উল্লেখিত কথাগুলো পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন ভালবাসা কি? এখন আপনি কোন প্রকার ভালবাসায় লিপ্ত আপনি নিজেই বেছে নিন। নিচে উল্লেখ করা ভালবাসার প্রকার তেকে।
ভালবাসা কত প্রকার ও কি কি?
১. প্রথম প্রেম: জীবনের প্রথম প্রেম সবার কাছেই স্মরনীয় হয়ে থাকে। প্রথম প্রেমের কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই তবে অনেকের ক্ষেত্রেই খুব কম বয়সে প্রথম প্রেম এসে থাকে। প্রথম প্রেম বেশিরভাগ সময়ই আদতে প্রেম হয়না, সেটা হয়ে থাকে Infatuation। প্রথম প্রেম হতে পারে কোন বাল্য বন্ধু, হতে পারে গৃহশিক্ষক বা স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা, হতে পারে বয়সে বড় কোন আপু, হতে পারে কোন ফিল্মের নায়ক বা নায়িকা, হতে পারে পাড়ার কোন হ্যান্ডসাম তরুনী বা বড়ভাই। কারো কারো ক্ষেত্রে আবার জীবনের প্রথম প্রেমই একমাত্র প্রেম।
২. প্রথম দেখায় প্রেম/Love at First Site: প্রথম দেখাতেই এই ধরনের প্রেমের সূত্রপাত। এ ধরনের প্রেম অনেক ক্ষেত্রেই একতরফা হয়। ছেলেদের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রেম বেশি দেখা যায়। প্রথম দেখাটা হতে পারে কোন বিবাহ অনুষ্ঠানে, শপিং মল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিতে, কোচিং সেন্টারে, স্যারের বাসায়, বন্ধু আড্ডায়। এমনকি বন্ধুর মোবাইলে ছবি দেখেও এ ধরনের প্রেমের শুরু হতে পারে। এ ধরনের প্রেমে প্রায় অবধারিতভাবেই তৃতীয় পক্ষের (বন্ধুকূল বা বড়ভাই) সাহায্যের দরকার পড়ে। এ ধরনের প্রেমের সূত্রপাতে রূপ সৌন্দর্য্য ও দৈহিক সৌন্দর্য্যের ভুমিকাই বেশি।
৩. বন্ধুত্ব থেকে প্রেম: এই ধরনের প্রেমের ক্ষেত্রে প্রেমিক ও প্রেমিকা দু'জনেই প্রথমে বন্ধু থাকে। আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব কালের বিবর্তনে প্রেমে রূপ নিতে থাকে, অনেক সময়ই দু'জনেরই অজান্তে। তবে আশেপাশের মানুষ (বিশেষত বন্ধুকূল) কিন্তু ঠিকই খেয়াল করে। দুঃখজনকভাবে এধরনের প্রেম অনেক সময়ই অকালে ঝরে যায় কোন একতরফা সিদ্ধান্ত বা পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে। অনেকে বন্ধুত্বের এই রূপান্তর মেনে নিতে পারেনা বলে অনুশোচনায় ভোগে - বিশেষত মেয়েরা।
৪. একরাতের প্রেম/One Night Stand: এগুলোকে প্রেম বললে পাপ হবে। ৯০% ক্ষেত্রেই ছেলেরাই এ ধরনের প্রেমের আয়োজক। দৈহিক বাসনাকে পূর্ণতা প্রদান করাই এই প্রেমের প্রধান উদ্দেশ্য। উদ্দেশ্য পূরণের পূর্বে কিছু নাম মাত্র ডেটিং হতে পারে। উদ্দেশ্য পূরণের জনপ্রিয় স্থান: কোন হোটেল, খালি ফ্ল্যাট, সমুদ্রতীরবর্তী কোন শহর।
এই ধরনের প্রেমের মূলমন্ত্র হলো:
"আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোনোদিন নয়........"
৫. বিবাহোত্তর প্রেম: এই প্রেম শুধুমাত্র স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দেখা যায়। বিয়ের ঠিক পর পর প্রথম কয়েক মাস এই প্রেম প্রবল থাকে। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পূর্বপরিচিত নয় এমন দু'জনের মধ্যে এ্যারেন্ঞ্জ বিয়ে হলে এই ধরনের প্রেম প্রবল রূপে পরিলক্ষিত হয়। প্রেম করে বিয়ে হলে সেক্ষেত্রে বিবাহোত্তর প্রেমে ভাঁটা পড়ে বলে একটি মতবাদ প্রচলিত আছে, কবে এর সত্যতা পরীক্ষিত নয়। বিবাহোত্তর প্রেম ফলাতে হানিমুনের জুড়ি নেই।
৬. পরকীয়া প্রেম: বিয়ের পর স্বামী বা স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন পুরুষ বা মহিলার সাথে প্রেমকেই পরকীয়া প্রেম বলে। পরকীয়া প্রেমের মূল কারনগুলো হলো:
ক. সময়ের সাথে সংসার জীবনের প্রতি অনাগ্রহ বা তিক্ততা চলে আসা।
খ. শারীরিক চাহিদা পূরণে স্বামী বা স্ত্রীর প্রতি একঘেঁয়েমি চলে আসা।
গ. শারীরিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে স্বামী বা স্ত্রীর অক্ষমতা বা অপূর্ণতা।
ঘ. নিতান্তই এ্যাডভেঞ্চার-প্রিয়তা, লুকিয়ে প্রেম করার স্বাদ অনুভব করা।
মহিলাদের মধ্যে পরকীয়া প্রেম আমাদের দেশে এখনো ততোটা জনপ্রিয় নয় যতোটা পুরষদের মধ্যে। পুরুষদের পরকীয়া প্রেমের ক্ষেত্রে তৃতীয় ব্যাক্তিটি কম বয়সী কোন অল্প বয়সী মহিলা এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে যুবতীও হয়ে থাকেন। মহিলাদের ক্ষেত্রে তৃতীয় ব্যাক্তিটি সাধারণত কোন মধ্যবয়সী পুরুষ হয়ে থাকেন। ৩০-৪৮ বছর বয়সীদের মধ্যে পরকীয়া প্রেম বহুলভাবে পরিলক্ষিত হয়।
৭. অপরিণত প্রেম/কম বয়সে প্রেম/না বুঝেই প্রেম: এ ধরনের প্রেম সাধারণত স্কুলে পড়ুয়া অবস্থায় হয়ে থাকে। মেয়েরাই এ ধরনের প্রেমে বেশি পড়ে। তবে ছেলেরাও পড়ে। প্রেমিক প্রেমিকাদের দু'জনই সমবয়সী হতে পারে। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রেমিক তার চেয়ে বয়সে বড়ও হতে পারে। তবে এ ধরনের প্রেমের সাফল্যের হার কম - অর্থাৎ এ ধরনের প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় খুব কম ক্ষেত্রেই।
৮. কর্মক্ষেত্রে প্রেম: কর্মসূত্রে দু'জন মানুষের পরিচয়ের মাধ্যমে এ ধরনের প্রেম গড়ে ওঠে। উক্ত দু'জন হতে পারেন কোন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীর দু'জন কর্মকর্তা অথবা কোন প্রজেক্টে পরস্পরের পার্টনার। অফিসে নতুন জয়েন করেছেন এমন কোন মেয়ের সাথে এরূপ প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের জন্য অফিসের পুরুষ কর্মকর্তাদের মাঝে তাগিদ দেখা যায়। বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের প্রেম বেশি দেখা যায়।
৯. মোবাইল প্রেম: বন্ধুর কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে বা ফোনবুক থেকে চুরি করে, পাড়ার বল্টুর দোকান থেকে সংগ্রহ করে, অন্য কোন সুত্র থেকে নাস্বার পেয়ে বা নিতান্তই মনের মাধুরী মিশিয়ে কোন নাম্বার বানিয়ে তাতে ফোন করে কোন মেয়ের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে এই ধরনের প্রেমের সূত্রপাত। অনেক সময় মোবাইলে এভাবে কথা বলে ছেলে মেয়ে পরস্পরের সাথে সামনাসামনি দেখা করে। এ ধরনের প্রেমের সফলতার হার খুবই কম। আসলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সফলতা এ ধরনের প্রেমের মূল উদ্দেশ্য নয়।
১০. ইন্টারনেটে প্রেম: ইন্টারনেটে চ্যাটিংয়ে বা সোসিয়্যাল মিডিয়া সাইটে (যেমন - ফেইসবুক, মাইস্পেস) দু'জনের পরিচয়ের মধ্য দিয়ে এ ধরনের প্রেমের সূত্রপাত। অনেক ক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়ের একজন বিদেশে অবস্থান করে। এভাবে পরিচয়ের পর ছেলে মেয়ে পরস্পরের সাথে সামনাসামনি দেখা করে। এ ধরনের প্রেমে উভয়পক্ষেরই ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থাকে অনেক। অনেক সময়ই কোন ছেলে মেয়ে সেজে অন্য কোন ছেলের সাথে এমন সম্পর্ক চালিয়ে যায়। আর তাই অনেক ক্ষেত্রেই এ ধরনের সম্পর্ক প্রতারণায় পরিণত হয়। পূর্বে এ ধরনের প্রেমের সাফল্যের হার বেশি থাকলেও বর্তমান সময়ে এসে সাফল্যের হার কম।
১১. ত্রিভূজ প্রেম: এ ধরনের প্রেমকে বলা যেতে পারে একজন মেয়েকে নিয়ে দু'জন ছেলের টাগ-অফ-ওয়ার বা দড়ি টানাটানি। একই মেয়ের প্রতি দু'জন ছেলের ভালোবাসা এই প্রেমের মূলকথা। উক্ত মেয়েকে পেতে দু'জন ছেলেই মরিয়া থাকে। ত্রিভূজ প্রেমের ক্ষেত্রে প্রায়শঃই মেয়েরা মানসিক দ্বন্দে ভোগে - কাকে পছন্দ করবে এই নিয়ে। অনেক সময়ই ছেলে দু'জনের মধ্যে প্রতিযোগিতা রূপ নেয় মারামারিতে। দু'জন মেয়ে আর একজন ছেলের মধ্যেও ত্রিভূজ প্রেম লক্ষিত হয়। তবে সেক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা মারামারিতে নয় বরং রূপ নেয় চুলোচুলিতে।
১২. বহুভূজ প্রেম/Multi প্রেম: একই মেয়ে বা ছেলের প্রতি ২ এর অধিক ব্যাক্তির অনুরাগই মূলতঃ বহুভূজ প্রেম। এক্ষেত্রে উক্ত মেয়ে বা ছেলেটি স্বভাবতই দৃষ্টিকাড়া সৌন্দর্য্যের অধিকারী হয়ে থাকেন। সবাই তার সাথে প্রেম করতে চায় এই বিষয়টি তাকে ব্যাপক আনন্দ দেয়।
১৩. অসমবয়সী প্রেম: এ ধরনের প্রেমের বৈশিষ্ট্য প্রেমিক ও প্রেমিকার মধ্যে বয়সের উল্লেখযোগ্য ব্যবধান। যদিও মেয়ের চাইতে ছেলে কয়েক বছর বড় হলেও তা স্বাভাবিক প্রেম হিসেবে ধরা হয়, তথাপি, যদি পার্থক্য খুব বেশি হয় - যেমন ১২ বছর তবে তা অসমবয়সী প্রেম হিসেবে ধরা হয়। মজার ব্যাপার হলো ছেলের চাইতে মেয়ে এক বছরের বড় হলেও তা অসমবয়সী প্রেম হয়ে হিসেবে ধরা হয়। অসমবয়সী প্রেমকে এ সমাজে বাঁকা চোখে দেখা হয়, বিশেষত যদি মেয়ে ছেলের চাইতে বয়সে বড় হয়। অসমবয়সী প্রেম বিয়েতে রূপ নিলে দাম্পত্য জীবন শান্তিপূর্ণ হয় না বলে একটি মতবাদ আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে, কিন্তু এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।
১৪. শারীরিক প্রেম/শরীর সর্বস্ব প্রেম: প্রেমিক ও প্রেমিকার মধ্যে শরীরি আকর্ষণই এই প্রেমের মূল উপাদান। আবেগ ততোটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।
১৫. দুধের মাছি প্রেম/অর্থসর্বস্ব প্রেম: "যতোদিন টাকা আছে, ততোদিন সম্পর্ক" - অনেকটা এই নীতির বলে এই ধরনের প্রেম গড়ে ওঠে। অবশ্যই ছেলেরাই টাকা ব্যয় করে থাকে এসব ক্ষেত্রে। ধনীর ঘরের ছেলেদের পক্ষে এই ধরনের সম্পর্ক বেশিদিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়। তবে মোটামুটি আয়ের ছেলেরা খরচের ঠেলায় অল্পদিনেই হাঁপিয়ে ওঠে, সম্পর্কও আর বেশিদিন থাকেনা। তখন ঐসব মেয়েরা অন্য ছেলের খোঁজে বেরোয়।
১৬. ঈর্ষাণ্বিত প্রেম: "অমুক ছেলে প্রেম করে, আমাকেও করতে হবে" বা "অমুকের বয়ফ্রেন্ড আছে,আমারো চাই" - অনেকটা এমনতর মানসিকতা থেকে এসব প্রেমের সূত্রপাত। এ ধরনের প্রেমগুলো অনেক সময়ই সাময়িক হয়ে থাকে। অধিকাংশ সময়ই বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড মনের মতো না হলেও প্রয়োজনের তাগিদে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া হয়।
১৭. জেদের বশে প্রেম: পূর্ববর্তী বা বর্তমান বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডকে অনেকটা দেখিয়ে দেয়ার ("তুমি ছাড়াও আমার প্রেম করার লোকের অভাব নেই") উদ্দেশ্যে যাকে সামনে পাওয়া যাবে ধরে তার সাথে প্রেম করাই এ ধরনের প্রেমের মূল লক্ষ্য। মনের মতো লোক পাওয়ার বিষয়টি এখানে নগণ্য।
১৮. চড়িয়ে খাওয়া প্রেম/গাধাখাটুনি প্রেম/ঘানি টানা প্রেম: প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছ থেকে কোন বিশেষ সুবিধা লাভই এ ধরনের প্রেমের উদ্দেশ্য। ক্লাসের ভালো রেজাল্ট করা মেধাবী ছাত্রটি এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় শিকার হিসেবে পরিগণিত হয়। মেয়েদের মধ্যে এ ধরনের প্রেমের প্রচলণ বেশি দেখা গেলেও ছেলেদেরকেও মাঝে মাঝে করতে দেখা যায়।
১৯. অব্যক্ত প্রেম/না বলা প্রেম: নীরবে এক অপরকে ভালোবেসে গেলেও পরিস্থিতি, সময় বা মনোবলের অভাবে প্রেমিক বা প্রেমিকার মধ্যে কেউই একে অপরকে কোনোদিন বলেনি। অব্যক্ত প্রেম হারানোর বেদনা খুব কষ্টদায়ক, জীবনের অন্যতম বড় ভুল হিসেবে মনে থাকে।
২০. সুপ্ত প্রেম: একে অপরকে ভালোবাসে কিন্তু কেউই কাউকে বলছে না, পুরো ব্যাপারটাই লুকিয়ে যাচ্ছে এমন প্রেমই সুপ্ত প্রেম। সুপ্ত প্রেম আজীবন সুপ্ত থেকে গেলে তা পরিণত হয় অব্যক্ত প্রেমে।
২১. চুক্তিবদ্ধ প্রেম: এ ধরনের প্রেম হয় পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে। সাধারণ অর্থে প্রেম বলতে যা বোঝায় তা এই ধরনের প্রেমে অনুপস্থিত থাকে। কোন ভবিষ্যৎ থাকেনা এসব সম্পর্কের। মূল উদ্দেশ্য হলো কোন বিশেষ গোষ্ঠীকে নিজেদের মধ্যে প্রেম দেখিয়ে কোন বিশেষ স্বার্থ চরিতার্থকরণ। শোবিজ ও মিডিয়ার তারকাদের মধ্যে এ ধরনের প্রেম বেশি দেখা যায়।
২২. মিথ্যে প্রেম/অভিনয় প্রেম: এ ধরনের প্রেমে প্রেমিক বা প্রেমিকার দু'জনের যেকোন একজন প্রেমের অভিনয় করে যায়। যখন প্রেমিক বা প্রেমিকার কেউ একজন ভবিষ্যতের কথা ভাবতে আরম্ভ করে তখন এই প্রেমের সমাপ্তি ঘটে। এ ধরনের প্রেমের পরিণতিও যেকোন একজনের জন্য খুবই কষ্টদায়ক।
২৩. ২য় ইনিংস প্রেম/Old is Gold প্রেম/Revived প্রেম: পূর্ববর্তী বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ডের সাথে পুনরায় জুড়ে গিয়ে এই প্রেম করা হয়।
২৪. ব্ল্যাকমেইল প্রেম/অনিচ্ছাপূর্বক প্রেম/জোড় খাটানো প্রেম: এটাকেও প্রেম বললে পাপ হবে। জোড়পূর্বক এসব প্রেম করা হয়ে থাকে। এর শিকার হয়ে থাকে মেয়েরাই। পাড়ার বখাটে ছেলে বা বড় ভাই, কলেজের বখাটে ছাত্র, কর্মক্ষেত্রে উপরস্থ কর্মকর্তা বা বস প্রধানত এরাই এ ধরনের সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী হন।
২৫. গায়ে পড়ে প্রেম/নাছোড়বান্দা প্রেম: মেয়ে কোন সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী নয় তবুও ছেলে জোড় চেষ্টা চালিয়ে যায় এমন প্রেমে। অনেক সময়ই এমন পরিস্থিতিতে মেয়েরা সরাসরি না বলতে পারে না যার মাশুল তাদেরকে পরে দিতে হয়।
২৬. বিদেশী প্রেম/পরবাসী প্রেম: এ ধরনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ছেলে বা মেয়ের মধ্যে অন্ততঃ একজন বিদেশী হয়।
২৭. অসাম্প্রদায়িক প্রেম: এ ধরনের প্রেমের ক্ষেত্রে ছেলে ও মেয়ে দু'জনে দুই ধর্ম বা সম্প্রদায়ের অনুসারী হয়ে থাকে। সমাজ এ ধরনের সম্পর্ককে সমর্থন করেনা। বিশেষতঃ হিন্দু-মুসলমান ছেলে-মেয়ের মধ্যে প্রেম বেশি বিতর্কের সৃষ্টি করে।
২৮. চাঞ্চল্যকর প্রেম/আলোচিত প্রেম: এ ধরনের প্রেমে প্রেমিক ও প্রেমিকা যাই করেন না কন তা মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর তথ্য হিসেবে প্রচার করা হয়। সাধারণত শো-বিজ আর মিডিয়ার তারকা ও সেলিব্রেটিরা এ ধরনের প্রেম করে থাকেন।
২৯. ঐতিহাসিক প্রেম: এইসব প্রেমের কাহিনীর অবসান ঘটেছে অনেক আগেই কিন্তু আজো রয়ে গেছে ইতিহাসের পাতায়। এখনো এসব প্রেমকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়।
৩০. ভাড়াটে প্রেম/ভ্রাম্যমাণ প্রেম/Roaming প্রেম: এ ধরনের প্রেমের প্রেমিক বা প্রেমিকারা বলতে গেলে ভাড়া খাটে। তারা সকালে একজনের গার্লফ্রেন্ড তো বিকেলে আরেকজনের। কোন নির্দিষ্ট ঠিক ঠিকানা নেই। ব্যাপারটা অনেকটা মাসে মাসে মোবাইল হ্যান্ডসেট চেন্ঞ্জ করার মতো।
৩১. প্রেমময় প্রেম: এই প্রেমে প্রেমিক আর প্রেমিকা দু'জনেই একজন আরেকজনের দিকে প্রেমময় ভঙ্গিতে ঘন্টার পর ঘন্টা তাকিয়ে থাকেন, হাত ধরে বসে থাকেন কোন রেস্টুরেন্টের অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশে, সারাক্ষণ I Love You বলে আর শুনেও ক্লান্তি আসে না তাদের। সারাদিন প্রেমের পর মোবাইলে ১২টার পরও কম জান না তারা।
৩২. ঝগড়াটে প্রেম: সারাক্ষণ দু'জনের মধ্যে খিটির-পিটির লেগে থাকাটা এই প্রেমের বৈশিষ্ট্য। কিছুক্ষণ হয়তো দু'জনে শান্ত থাকে, তারপর আবার কিছু না কিছু একটা নিয়ে একজন শুরু হয়ে যায়। এ ধরনের প্রেমে ঝগড়াগুলো ক্ষণস্থায়ী হয়, কিন্তু খুব ঘনঘন হয়। ঝগড়াগুলো অধিকাংশই হয় ফোনে। বন্ধুকূল সর্বদা দু'জনের ঝগড়া মিটাতে ব্যস্ত থাকে। মেয়ে তার সখীদের কাছে এই ঘনঘন ঝগড়ার কথা বলে বেড়ায়।
৩৩. সমলিঙ্গীয় প্রেম: আমাদের দেশে এখনো খুব একটা প্রচলিত না হলেও বাইরের অনেক দেশেই এই ধরনের প্রেমের প্রচলণ আছে। দু'জন ছেলের মধ্যে হলে তাদেরকে Gay বলে আর দু'জন মেয়ের মধ্যে হলে Lesbian।
৩৪. অমিল প্রেম/দুনিয়াছাড়া প্রেম: এই প্রেমে প্রেমিক ও প্রেমিকার মধ্যে কথাবার্তা, মত, পছন্দ, অপছন্দ কোন দিক দিয়েই কোন মিল থাকেনা, তারপরও কিভাবে যেন সম্পর্ক টিকে থাকে।
৩৫. 'আজো তোমায় ভালোবাসি' প্রেম: এই প্রেমে প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদ ঘটেছে আগেই। তবুও আজো তারা একে অপরকে ভালোবাসেন। নীরবে চেয়ে যান সেই মানুষটির সঙ্গ যার সাথে একসঙ্গে জীবন কাটাতে পরিস্থিতিই ছিলো একমাত্র ও সবচেয়ে বড় বাধা।
৩৬. ব্যর্থ প্রেম: এবং সবশেষে আছে ব্যর্থ প্রেম। এ প্রেম শুরু হবার আগেই শেষ হয়ে যায়। ব্যর্থ প্রেমিকার চাইতে ব্যর্থ প্রেমিকের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। ব্যর্থ প্রেমের শেষটা হয় প্রস্তাব প্রত্যাখান দিয়ে। কখনো কখনো ছেলেদের ভাগ্যে জোটে থাপ্পড়, মেয়েদের জুতার বাড়ি আর কখনো কখনো গণধোলাই। অনেক সময়ই ব্যর্থ প্রেমের পরিণতি হয় করুন। কেউ দেবদাস হয়ে যায়, কেউবা মেয়েদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলে ও "দুনিয়ার সব মেয়ে এক" এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। দুর্বল মানসিকতার কেউ কেউ আত্মহননের পথও বেছে নেয়।
নোটঃ কাউকে মনে কষ্ট দেওয়ার জন্য লিখি নাই ,উত্তর খুঁজতে খুঁজতে যা মনে আসল তাই লিখে ফেল্লাম , যদি কারো খারাপ লেগেও থাকে তাহলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দিবেন।আর যা বললাম তা ঠিক নাকি জানি না,একটু শুধরে দিবেন প্লিজ। প্রেম খুবই পরিবর্তনশীল ও ব্যাক্তিভেদে এর সংজ্ঞা ভিন্ন। আর আমার দেয়া প্রকারভেদগুলোর সাথে কারো কারো দ্বিমত থাকাটা স্বাভাবিক। আমি দাবী করছি না এখানে সব ধরনের প্রেমের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু অনেক ধরনের কথা বলা হয়েছে এটা সত্য। প্রকারভেদগুলো আলোচনার সময় যতোটা সম্ভব নিরপেক্ষতা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি। কারো কারো কাছে এই প্রচেষ্টা ধৃষ্টতা মনে হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
No comments:
Post a Comment